✍️ প্রবাসী প্রতিনিধি । | দৈনিক চিৎলা টিভি:
প্রতিদিনের মতোই কঠোর পরিশ্রমে ডুবে থাকা প্রবাসী শ্রমিকটির স্বপ্ন ছিল খুব সাধারণ—একটু ছুটি, একটু বিশ্রাম, আর প্রিয় পরিবারকে দেখার সুযোগ। দীর্ঘদিন ধরে মালিকের কাছে বারবার ছুটি চাইতে চাইতে একসময় ক্লান্ত ও ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন—ফিরে যেতে চাই… শুধু একবার পরিবারের মুখটা দেখতে চাই…”কিন্তু তার সেই প্রত্যাশা ছিল সোনার হরিণের মতো ধরাছোঁয়ার বাইরে।অবশেষে সেই ছুটি মিলেছে—
কিন্তু সেটা এক মাসের নয়, দুই মাসেরও নয়…
এটা আজীবনের ছুটি।
হ্যাঁ, আর কোনোদিন তাকে প্রবাসের মাটিতে ফিরতে হবে না।না থাকবে মালিকের সামনে দাঁড়িয়ে মিনতি, না থাকবে রাতভর শিফটের ক্লান্তি।জীবনের সব কষ্ট, সব সংগ্রাম থেমে গেছে এক নিথর নীরবতায়।আজ তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কাঠের বাক্সে বন্দি অবস্থায়।
এক টুকরো নিথর দেহে জমে আছে রক্ত-ঘামের হাজারো দিনের ইতিহাস।পরিবারের স্বপ্ন, অপেক্ষা, ভালোবাসা—সবকিছু থমকে গেছে এক সাগর কান্নায়।এটা কোনো গল্প নয়।এটা হাজারো প্রবাসীর জীবনের নির্মম বাস্তবতা।যে মানুষগুলো দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরায়,অপমান সহ্য করে, হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে, জীবনকে বাজি রেখে বিদেশে কাজ করে—তাদের অনেকের শেষ ঠিকানা হয় একটি কফিন।মানুষ ভাবে প্রবাস জীবন মানেই টাকা ছাপানোর মেশিন।কিন্তু তারা জানে না—
এই পথে হাঁটা মানেই প্রতিদিন মানসিক যন্ত্রণা, একাকিত্ব, ভয়ের সাথে যুদ্ধ করা।মালিকের রাগ, কাজের চাপ, খাবারের কষ্ট—সব মিলিয়ে এটি হয়ে ওঠে এক নির্মম নরকযাত্রা।আজ যে প্রবাসী ভাইটি ফিরে এলেন,তিনি আর কোনোদিন ফিরবেন না কর্মস্থলে।ফিরে যাবেন শুধু গ্রামের মাটিতে—চিরনিদ্রায় শায়িত হতে।তার পরিবারের কাছে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে—একজন প্রবাসীর “শেষ ছুটি” কতটা ভয়ংকর, কতটা বেদনাবিধুর হতে পারে।প্রবাসীদের প্রতি সম্মান ও মানবিক আচরণ নিশ্চিত করা শুধু প্রয়োজন নয়,
এটি সময়ের কঠিন দাবি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: VantageSoftGlobal
Leave a Reply